একজন চাকুরী জীবি তার চাকুরী জীবন শেষ করার পর মাসিক ভাবে পেনশন গ্রহণ করে থাকে। এটি মূলত একটি সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সর্বনিম্ন ২৫টি বছর সরকারি কাজে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে ব্যয় করলেই কেবল এই পেনশন পাওয়া যায়। একজন সরকারি চাকরিজীবী অপরাধমূলক কাজ বা ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে স্বেচ্ছায় চাকরি হতে ইস্তফা দিলে মাসিক পেনশন বা আনুতোষিক কোনটিই পাওয়া যায় না। মাসিক পেনশন প্রাপ্য অবস্থায় কোন পেনশনার যদি মারা যায় তবে তার পরিবারও সেই একই হারে স্ত্রী/স্বামী বা তার প্রতিবন্ধী সন্তান আজীবন এই মাসিক পেনশন প্রাপ্য হয়ে থাকেন।
পারিবারিক পেনশন হচ্ছে চাকুরীজীবী চাকরিরত অবস্থায় বা পেনশন প্রাপ্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবার যে পেনশন বা তার পেনশন মাসিক ভিত্তিতে পেয়ে থাকেন সেটিই হচ্ছে পারিবারিক পেনশন। বাংলাদেশ সরকার এই পেনশন মূলত চাকরিজীবী বা পেনশনারের অনুপস্থিতিতে তার পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তার জন্য এ ব্যবস্থা রেখেছে। চাকরিকালীন অবস্থায় কোন কর্মচারী মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবার আনুতোষিক বা গ্র্যাচুইটি বা এককালীন অর্থ পেয়ে থাকে এবং নির্ধারিত মাসিক পেনশন পেয়ে থাকেন সেটিও পারিবারিক পেনশন হিসাবেই পরিচিত।
পারিবারিক পেনশন বর্তমান সর্বনিম্ন ৩,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অতীতে যারা পেনশনে গিয়েছে তাদের মূল বেতন কম থাকায় তাদের পেনশনের পরিমাণও কম তাই সরকার এটির সর্বনিম্ন সিলিং ৩,০০০ টাকা নির্ধারণ করেছে। সাথে ১,৫০০ টাকা চিকিৎসা প্রাপ্য হবেন। তবে দশ বছরের মধ্যে যারা পেনশনে গিয়েছেন তাদের পেনশন পার্থক্য প্রায় অর্ধেক। পে স্কেল জারির আগে পরে কেউ ১০ হাজার টাকা পেনশন পাচ্ছে কেউ ২০ হাজার টাকা। তবে বাংলাদেশ সরকারি পেনশন পুন:স্থাপন করার ফলে পেনশনার বা পারিবারিক পেনশন উপকৃত হচ্ছে। বিধবা পারিবারিক পেনশন পুন:স্থাপন না হওয়ায় বিধবাগণ দুরাবস্থায় পড়ে রয়েছেন।
সরকারি চাকরি শেষে একজন কর্মচারী পেনশন দাবী করে থাকেন। আনুতোষিক বা গ্র্যাচুইটি এবং মাসিক পেনশন নির্ণয় সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারনা থাকা প্রয়োজন। হ্যাঁ আপনার দপ্তরই এসব হিসাব করে দিবে কিন্তু একজন সচেতন চাকরিজীবী হিসেবে প্রত্যেক কর্মচারীর পেনশন ও আনুতোষিক নির্ণয়ের জন্য একটি সুষ্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন।